গুজরাটের আহমেদাবাদ জেলার বাভলা তালুকের বাগোদরা গ্রামের একটি ভাড়া বাসা থেকে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, গত শুক্রবার (১৯ জুলাই) ভোররাতে মা-বাবা তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে বিষ পান করানোর পর নিজেরা আত্মহত্যা করেছেন। মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে ভিপুল ভাঘেল (৩৪), তাঁর স্ত্রী সোনাল ভাঘেল (২৬) ও তাঁদের তিনটি শিশু—কারিনা (১১), ময়ূর (৮) ও প্রিন্সি (৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিপুল পেশায় অটোচালক ছিলেন। পরিবারটি কয়েক মাস ধরে ওই বাড়িতে ভাড়া থাকছিল। ভিপুলই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য। সম্প্রতি ঋণ নিয়ে একটি অটোরিকশা কেনেন ভিপুল। জানা গেছে, ওই অটোর ইএমআই পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। আত্মীয়দের সন্দেহ, তীব্র আর্থিক সংকটই তাঁকে পরিবারের সদস্যদের বিষ পান করিয়ে হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছেন।
ঘটনার সময় বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রতিবেশীদের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে একসঙ্গে পাঁচটি নিথর দেহ উদ্ধার করে।
আহমেদাবাদ গ্রামীণ পুলিশ সুপার ওম প্রকাশ জাট বলেন, ঘটনাস্থলে কোনো রকমের আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। বিষক্রিয়ায় মৃত্যু কি না, তা জানতে ফরেনসিক দল কাজ করছে।
ঘটনার তদন্তে থাকা এক সাবইন্সপেক্টর পিএন গোহিল বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সুইসাইড নোট মেলেনি। তবে পরিবারের ঋণের বোঝা ও আর্থিক অনটনের বিষয়টি উঠে এসেছে। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভিপুল কিছু দিন ধরে মানসিক চাপে ছিলেন। নিয়মিত ইএমআই দিতে পারছিলেন না। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন, তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।
এখন পর্যন্ত তদন্তে যতটুকু জানা গেছে, তাতে বোঝা গেছে, মৃতদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। বাড়ির ভেতরে লড়াই বা জবরদস্তির চিহ্নও মেলেনি। স্থানীয় থানায় ‘অ্যাকসিডেন্টাল ডেথ রিপোর্ট’ (এডিআর) করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ ঘটনায় গোটা গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন, একসঙ্গে তিনটি শিশুর মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না।