Tuesday, July 29, 2025

দোকানে গিয়ে পণ্য চুরি, ভারতীয় নারী গ্রেফতার

আরও পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্টোর থেকে পণ্য চুরির অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন এক ভারতীয় নারী। অভিযুক্ত ওই নারী যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে গিয়েছিলেন এবং একটি স্টোর থেকে প্রায় ১৩০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা) মূল্যের পণ্য চুরি করেন।

এই ঘটনার একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার (১৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে যাওয়া এক ভারতীয় নারীকে টার্গেট নামের খুচরা বিক্রেতা চেইনের এক দোকান থেকে পণ্য চুরির অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের একটি টার্গেট স্টোরে সাত ঘণ্টার বেশি সময় ঘোরাঘুরির পর তার সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ্য করে কর্মীরা পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ জানায়, ওই নারী প্রায় ১৩০০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা) মূল্যের পণ্য চুরি করেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  নয়াদিল্লিকে সংলাপের প্রস্তাব দিলেন শেহবাজ

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের বডিক্যামেরা ফুটেজে এক টার্গেট কর্মী অভিযোগ করছেন, “এই নারী সাত ঘণ্টা ধরে দোকানে ঘুরছিলেন। তিনি জিনিস তুলছিলেন, ফোনে দেখছিলেন, এক শেলফ থেকে আরেক শেলফে যাচ্ছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত কোনও পেমেন্ট বা অর্থ পরিশোধ না করেই দোকানের পশ্চিম দিকের গেট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।”

ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ওই নারী বিষয়টি মীমাংসা করতে চান এবং পণ্যগুলোর দাম পরিশোধের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, “আমি দুঃখিত যদি আপনাদের বিরক্ত করে থাকি। আমি এই দেশের মানুষ নই, এখানেই থাকব না।”

উত্তরে নারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আপনার দেশে— ভারতে কি জিনিস চুরি করা বৈধ? আমার তো মনে হয় না।”

এরপর বিল যাচাই করে কাগজপত্র প্রক্রিয়ার জন্য পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে স্টেশনে নিয়ে যায়। ভিডিওতে বলা হয়, ওই নারীর বিরুদ্ধে ফেলোনি (গুরুতর অপরাধ) অভিযোগ আনা হচ্ছে। যদিও তাকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুনঃ  এবার অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে গেল বিমান

এদিকে এই ঘটনার ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে অভিবাসীদের আইন পালন, মার্কিন ভিসা ও অভিবাসন নীতির পরিণতি নিয়ে।

ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, “চলতি বছরের ১ মে এক নারী দোকানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটিয়ে হাজার ডলারের পণ্য চুরি করে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশকে ডাকা হয়। এরপর যা ঘটে, সেটিই এই ভিডিওতে রয়েছে।”

ঘটনার পর টার্গেট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। পুলিশ বিভাগ থেকেও এখনও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে ভিডিও ঘিরে অনলাইনে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একজন মন্তব্য করেন, “আমি নিজেও অভিবাসী, কিন্তু কখনো ভাবতেও পারি না কোনো অতিথি দেশে গিয়ে এমন কাজ করার সাহস কেউ পায়!”

আরও পড়ুনঃ  একই পরিবারের ৫ সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু

আরেকজন বলেন, “ভাষা বা সংস্কৃতির কোনো বাধা এখানে ছিল না। সে জানত সে কী করছে।”

তৃতীয় একজন লেখেন, “আমি যুক্তরাজ্যে ৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে বৈধ অভিবাসী হিসেবে থেকেছি। সবসময় চেষ্টা করেছি আইন না ভাঙতে, স্থানীয়দের শ্রদ্ধা করতে। একজন অভিবাসী হিসেবে আপনি নিজের দেশ ও সংস্কৃতির প্রতিনিধি। এই নারী আসলে অপরাধী। সে সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে, যা হয়তো ভারতে কখনও কখনও কাজ করে। কিন্তু এখানে এমনটা হলে পার পাওয়া যাবে, এটা ধরে নেওয়া ভুল।”

আরও একজন লিখেছেন, “দেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে লজ্জায় ফেলেছে! ভুল কারণে শিরোনাম হয়েছে। বিদেশে দেশের নাম তুলে ধরুন, এমন অপমান নয়।”

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে আরও এক ভারতীয় শিক্ষার্থীকে চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যেটিও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ